সিলেট: টানা বৃষ্টিতে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ১৬ হাজার ১৬৫ হেক্টর রোপা আমন ও বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এভাবে অব্যাহত বৃষ্টি থাকলে সব ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। তবে আর যদি বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে তলিয়ে যাওয়া রোপা আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে।
ওই সূত্র আরও জানায়, দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেট জেলায় সাড়ে আট হাজার হেক্টর রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের ৭ উপজেলায় ৭ হাজার ৪৯৫ হেক্টর রোপা আমন ধান, বীজতলা ও ৫০ হেক্টর সবজি তলিয়ে গেছে। মৌলভীবাজারে ১০০ হেক্টর ও হবিগঞ্জে ৭০ হেক্টর রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। সিলেট বিভাগের চার জেলায় এ মৌসুমে ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭০ হেক্টর রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। সিলেট বিভাগীয় কৃষ্টি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কর্মকর্তা মতিলাল হাওলাদার দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য জানান।
সিলেট আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। তিনি আরও জানান, আগামী তিন দিন এভাবে বৃষ্টিপাত হবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমনটাই জানা গেছে।
এদিকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তাঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লাবিত হয়। এতে করে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
অপরদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাজার হাজার নৌকা সারী বদ্ধভাবে নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্রমিকরা বেঁধে রেখেছেন।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনউদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এ উপজেলায় বৃষ্টির কারণে কিছু বীজতলায় পানি উঠেছে। তবে তলিয়ে যায়নি। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ভোলাগঞ্জ কোয়ারিতে উল্লেখযোগ্য হারে পাথর উত্তোলন কমে গেছে।’
অন্যদিকে, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. খালেদুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে উপজেলার কিছু এলাকার রাস্তাঘাটে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ভারী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি।’
নেশন নিউজ/এম/এফএ/এআর